এই বছরের নতুন সিলেবাসে প্রকাশিত (Class 3 Bengali book question answer) তৃতীয় শ্রেণির বাংলা বই শিক্ষার্থীদের জন্য এনেছে অনেক সুন্দর পাঠ। তার মধ্যে অন্যতম হলো অধ্যায় ১ঃ চারপাশে প্রকৃতি পাঠঃ ১ - “সবার আমি ছাত্র” – কবি সুনির্মল বসুর রচনা। এই পাঠে কবি দেখিয়েছেন কিভাবে প্রকৃতি, মানুষ আর জীবনের নানা দিক থেকে আমরা শিখতে পারি।
এখানে আমরা দিয়েছি এই পাঠের সহজ-সরল প্রশ্নোত্তর (Class 3 Bengali book question answer), যা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় বিশেষভাবে সহায়ক হবে।
(toc)
মা-বাবা, গুরুজন কিংবা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে আমরা পাঠগ্রহণ করি তো বটেই, এর পাশাপাশি বিশ্বপ্রকৃতি থেকেও আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে, এই কবিতায় করি সেটা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
সবার আমি ছাত্র Class 3
আকাশ আমায় শিক্ষা দিল
উদার হতে ভাই রে,
কর্মী হবার মন্ত্র আমি
বায়ুর কাছে
পাইরে।
পাহাড় শিখায় তাহার সমান
হই যেন মৌন-মহান,
কোলা মাঠের
উপদেশে-
দিল-খোলা হই তাই রে।
সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয়
আপন তেজে জ্বলতে,
চাঁদ
শিখালো হাসতে মেদুর;
মধুর কথা বলতে।
ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর, —
অন্তর হোল
রত্ন-আকর;
নদীর কাছে শিক্ষা পেলাম
আপন বেগে চলতে।
মাটির কাছে সহিষ্ণুতা
পেলাম আমি শিক্ষা,
আপন কাজে কঠোর হতে
পাষাণ দিল
দীক্ষা।
ঝরনা তাহার সহজ গানে
গান জাগালো আমার প্রাণে,
শ্যামবনানী
সরসতা
আমায়
দিল ভিক্ষা।
বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর,
সবার আমি ছাত্র,
নানা ভাবের নতুন
জিনিস
শিখছি দিবারাত্র;
এই পৃথিবীর বিরাট খাতায়
পাঠ্য যে সব পাতায়
পাতায়
শিখছি সে সব কৌতূহলে
সন্দেহ নাই মাত্র।।
ক্রিয়াকলাপ পাঠভিত্তিক
১। এসো, লিখি—
(ক) আকাশ আমাদের কী শিক্ষা দেয়?
উত্তর: আকাশ আমাদের শিক্ষা দেয় উদার হতে।
(খ) পাহাড় ও গাছের কাছে থেকে আমরা কী শিখতে পারি?
উত্তর: পাহাড় থেকে দৃঢ়তা এবং গাছের থেকে সহিঞ্চুতা শিখতে পারি।
(গ) কবি কেন নিজেকে সবার ছাত্র বলেছেন?
উত্তর: কবি প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান থেকে শিক্ষা নেন, তাই তিনি নিজেকে সবার ছাত্র বলেছেন।
(ঘ) বিশ্বজোড়া পাঠশালা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: এই পৃথিবীটাই একটি বড় পাঠশালা, যেখানে প্রকৃতির কাছ থেকে আমরা শিক্ষা পাই— সেটাই বিশ্বজোড়া পাঠশালা।
(ঙ) পাঠটির কবির নাম কী?
উত্তর: পাঠটির কবির নাম সুনির্মল বসু।
(চ) মাটির কাছ থেকে আমরা কী শিক্ষা পাই?
উত্তর: মাটির কাছ থেকে আমরা নম্রতা ও সহনশীলতা শিখি।
এসো, জেনে নেই —
'পাঠশালা' শব্দটির অর্থ বিদ্যালয়, যেখানে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি। কিন্তু এই কবিতায় 'পাঠশালা' বলতে বিশ্ব-প্রকৃতিকে বোঝানো হয়েছে । যেহেতু প্রকৃতি থেকেও আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি।
২। এসো, 'ক: অংশের সঙ্গে 'খ' অংশ মিলিয়ে লিখি।
উত্তরঃ
ভাষা অধ্যয়ন
৩। ক) নীচে যে-শব্দগুলি রয়েছে তার মধ্যে কিছু শব্দ কবিতাটিতে পড়েছ তোমরা। এসো, সেই শব্দগুলি খুঁজে বের করে চিহ্নিত করি আমরা —
উত্তরঃ
খ) এসো, আমরা নীচের শব্দগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করি —
উদাহরণ —
৪) এসো, আমরা নীচের শব্দগুলো দিয়ে বাক্য রচনা করি —
সূর্য : সূর্য উঠলে মাঠে সোনালি আলো ছড়ায় ।
চাঁদ : চাঁদের আলোয় রাতটা রূপালি হয় ।
ছাত্র : ভালো ছাত্র শিক্ষক ও গ্রামের সবার আদরের হয়।
পাহাড় : সবুজে ঢাকা পাহাড় মেঘ ছুঁয়েছে ।
উদার : উদার মানুষ সবার দুঃখে পাশে থাকে ।
নদী : নদীর কূলে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা খেলাধুলা করে।
৫) এসো, আমরা এবার শব্দ নিয়ে খেলা করি। নীচে একটি শব্দের তালিকা রয়েছে। সেই শব্দগুলির শেষ অক্ষরটির সঙ্গে মিল রেখে আমরা নতুন নতুন শব্দ বসাই —
চাল — ডাল, হাল, খাল, জাল ।
মান — বান, দান, গান, জান ।
বল — দল, জল, ফল, মল ।
বীর — নীর, ধীর, ক্ষীর, তীর ।
৬) এসো, আমরা এবার আর এক নতুন খেলা খেলি। অর্থ অনুযায়ী রেখা টেনে বাঁদিকের ও ডানদিকের শিব্দগুলির মিল ঘটিয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য গঠন করি
উত্তরঃ
জ্ঞান-সম্প্রসারণ
৭) ক) এসো, আমরা আমাদের চারপাশের পরিবেশ ভালো করে দেখি, আর এর একটা তালিকা তৈরি করি
গাছপালা | ফলমূল | জীবজন্তু | কীটপতঙ্গ |
---|---|---|---|
শাল, সেগুন, বট, কৃষ্ণচুড়া, সুপারি | আম, জাম, কাঠাল, আনারস, লিচু, কলা | ছাগল, গরু, মহিষ, মেষ, কুকুর, বিড়াল | পিঁপড়া, মশা, মাছি, প্রজাপতি, মৌমাছি, পঙ্গপাল, গুবরপোকা, ফড়িং, উইপোকা, ঝিঁঝিঁ পোকা |
খ) এবার তোমার তালিকায় নেই, অথচ তোমার সহপাঠীর তালিকায় রয়েছে সেই শব্দগুলিতে সেরকম শব্দ একবার খুঁজে বের করার চেষ্টা করে দেখি আমরা, কেমন?
উত্তরঃ নিজেরা চেষ্টা করো ।
গ) ওপরে তুমি যে-তালিকা তৈরি করেছ, সেখানে হয়তো পিঁপড়ের নাম রয়েছে পিঁপড়ে আমাদের শেখায় দুর্দিনের জন্য সঞ্চয় করতে। তোমাদের তালিকা থেকে এমনই কয়েকটি নাম বের করে এদের কাছ থেকে কী শিখি আমরা- তার একটা তালিকা তৈরি করি, এসো।
৮। এসো, ভাবি এবং ধাঁধার উত্তর খুঁজি
- একটা ঘরে একটাই থাম বলো দেখি তার কী নাম?
- উত্তরঃ ছাতা ।
- উড়লেও পাখি নয়, বলো দেখি কারে কয়?
- উত্তরঃ উড়োজাহাজ।
- খেতে বুড়ো সুখ, সারা গায়ে চোখ
- উত্তরঃ আলু ।
৯। এসো, গান গাই
এসো শারদ প্রাতের পথিক
এসো শিউলি-বিছানো পথে।
এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে
এসো অরুণ-কিরণ-রথে।।
দলি, শাপলা শালুক শতদল
এসো রাঙায়ে তোমার পদতল
নীল লাবনি ঝরায়ে ঢলঢল
এসো অরণ্য পর্বতে ।।
এসো ভাদরের ভরা নদীতে
ভাসায়ে কেতকী পাতার তরণী
এসো বলাকার রং পালক
কুড়ায়ে বাহি' ছায়াপথ-সরণি।
শ্যাম শস্যে কুসুমে হাসিয়া
এসো হিমেল হাওয়ায় ভাসিয়া
এসো ধরণীরে ভালোবাসিয়া
দূর নন্দন-তীর হতে।।