পালা গানের কথা পাঠের প্রশ্ন উত্তর Class V Bengali Lesson 13 all notes Assam

ডেইলি বরাক
By -

পালা গানের কথা পাঠের প্রশ্ন উত্তর, পাঠ-১৩ Class 5 Bengali Notes Assam, Scert Assam.


(toc)

ক – পাঠভিত্তিক

উত্তর দাও

(ক) ‘মনসামঙ্গল’ কোন মাসে পাঠ করা হয়?
উত্তরঃ- ‘মনসামঙ্গল’ শ্রাবণ মাসের শুরু হতেই পাঠ করা হয়৷

(খ) লোক-সংস্কৃতির কয়েকটি অঙ্গের নাম বলো ?
উত্তরঃ- লোক-সংস্কৃতির কয়েকটি অঙ্গের নাম হলো – পুতুল নাচ, যাত্রা গান, কীর্তন, চড়কের শিব-কালীর সং, বরাকের বৌ নাচ,  ধামাইল প্রভৃতি।

(গ) ‘মনসামঙ্গলে’ কার কার কাহিনি বিবৃত?
উত্তরঃ- ‘মনসামঙ্গলে’ দেবী মনসা, চাঁদ সদাগর, বেহুলা লখিন্দরের কাহিনি বিবৃত৷

(ঘ) ‘সুকনান্নি’ বলতে কাকে বোঝানো হয়?
উত্তরঃ- ‘সুকনান্নি’ অর্থাৎ সুকবি বল্লভ নারায়ণদেবের ‘পদ্মপুরাণে’র আখ্যান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল ‘ওজা-পালি’ লোকনাট্যের এক বিশেষ ধারা৷

(ঙ) ‘সুকনান্নি’ ওজা-পালিতে কোন কোন
দেবীর গান পরিবেশন করা হয়?
উত্তরঃ-  ‘সুকনান্নি’ ওজা-পালিতে মনসা, দুর্গা, কালী প্রমুখ দেবীর মাহাত্ম্য প্রকাশক পদ পরিবেশন করা হয়।

(চ) ‘ওজা’ বলতে কাকে বোঝানো হয়?
উত্তরঃ- ওজা-পালি লোকনাট্যে অনুষ্ঠানটির মুখ্য পরিচালক ওজা অনুষ্ঠানের মূল পদ পরিবেশন করেন৷ বিভিন্ন রাগ ও তালের গীত পরিবেশনের সময় ওজা নানা ধরনের অঙ্গ সঞ্চালন করেন।

(ছ) ‘ওজা-পালি’ আসরে ওজার প্রধান সহায়ক কে?
উত্তরঃ- ওজা-পালি আসরে ওজার একজন মুখ্য সহায়ক এবং কয়েকজন অনুচর থাকে। মুখ্য সহায়ককে বলা হয় ‘দাইনা-পালি’ এবং অন্যদের ‘পালি’।

(জ) ‘দোহার’ কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ- মঙ্গলচণ্ডীর পূজাতে মূল গায়েনের সঙ্গে যারা সংগীতে সহযোগীতা করেতেন বা মূল গায়নের পুনরাবৃত্তি করতেন তাঁদের ‘দোহার’ বলা হয়।

(ঝ) ‘হনুমান মুখা’ কী?
উত্তরঃ- পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায় শিবের মাহাত্ম্যসূচক ‘গম্ভীরা’ উৎসব প্রচলিত। গম্ভীরা মণ্ডপে শিব-দুর্গা, রাম-লক্ষণ, ভূত-প্রেত, হনুমান, বুড়া-বুড়ি নৃত্য ইত্যাদি আমোদজনক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়৷ এই নৃত্য-গীতের অনুষ্ঠানে নানা ধরনের মুখা বা মুখোশ ব্যবহার করা হয়৷ হনুমান মুখা গম্ভীরা উৎসবের আমোদ আনন্দে ক বিশেষ মাত্রা যুক্ত হয়৷

(ঞ) বাংলায় যাত্রাগানের উদ্ভব কোথা থেকে হয়েছিল?
উত্তরঃ- বঙ্গ সংস্কৃতিতে রামায়ণ, মহাভারত এবং মনসামঙ্গল, চণ্ডীমঙ্গল, ধর্মমঙ্গল ইত্যাদি বিভিন্ন মঙ্গলকাব্যের কাহিনি আগে পাঁচালি ছন্দে পরিবেশন করা হত৷ এই পাঁচালির অনুষ্ঠান থেকেই বাংলায় যাত্রাগানের উদ্ভব হয়েছিল।

কোনটি কার সঙ্গে সম্পর্কিত, তা মেলাও
উত্তরঃ-



নীচের শব্দগুলোর অর্থ শব্দ-সম্ভার দেখে খুঁজে নিয়ে লেখো।

উত্তরঃ-  পরম্পরা – ধারাবাহিক।
আখ্যান – কাহিনি।
মাহাত্ম্য – মহিমা গুণ কীর্তন৷
ঐতিহ্য – পরম্পরায় চলে আসা বিশ্বাস।
সম্বলিত – সমন্বিত৷

উত্তর বলো ও লেখো। (পালা গানের কথা পাঠের প্রশ্ন উত্তর)

(ক) ওজা-পালি দলের সদস্যদের কাকে কী বলা হয়?
উত্তরঃ- ওজা-পালি লোক-নাট্যের ওজা হলেন অনুষ্ঠানটির মুখ্য পরিচালক। তাঁর মুখ্য সহায়ককে বলা হয় দাইনা পালি, অন্যদের ‘পালি’ বলা হয়৷

(খ) মঙ্গলচণ্ডীর গীতের আসরের সদস্যদের কাকে কী বলা হয়?
উত্তরঃ- মঙ্গলচণ্ডীর গীতের আসরে যিনি মূল সংগীত পরিবেশন করতেন তাঁকে মূল গায়েন বলা হয়। যাঁরা মূল গায়েনকে সংগীতে সহযোগিতা করতেন বা মূল গায়েনের পুনরাবৃত্তি করতেন তাঁদের ‘দোহার’ বলা হত। মন্দিরা, খোল, তানপুরা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র নিয়ে যাঁরা সহযোগিতা করতেন তাদের বলা হত বায়েন। মূল গায়েন এবং দোহারেরা মন্দিরা নিয়ে তালে তালে নেচে নেচে গান পরিবেশন
করতেন।

(গ) ‘গম্ভীরা’ উৎসবে কী কী নৃত্যের আয়োজন হয়?
উত্তরঃ- গম্ভীরা উৎসবে শিব-দুর্গা, রাম লক্ষণ, ভূত-প্রেত, হনুমান, বুড়া-বুড়ি নৃত্যের আয়োজন হয়।

পাঠে তোমরা ‘লোক-সংস্কৃতি’ শব্দটি পেয়েছ। ‘লোক-সংস্কৃতির অন্তর্গত কয়েকটি উৎসব-অনুষ্ঠানের নাম উল্লেখ করো এবং প্রতিটির সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রস্তুত করো।

উত্তরঃ- কীর্তনগান– বৈষ্ণবপদ মূলত গান। ভক্তদের আসরে এগুলি যখন গাওয়া হয় তখন তাকে কীর্তন বলে। কীর্তন গানে পদাবলীর তিনটি ভাগ- নামকীর্তন, পালাকীর্তন ও সূচক কীর্তন। দলবদ্ধভাবে কৃষ্ণনাম গান হল নামকীর্তন। পালাকীর্তনে রাধাকৃষ্ণের কাহিনি বিভিন্ন পালার আকারে গীত হয়। সূচক কীর্তন হল কোন ভক্ত সাধকের তিরোধান উপলক্ষে গীত।

গৌরচন্দ্রিকা – চৈতন্যদেবের আবির্ভাবের পূর্বেও বাংলাদেশে বৈষ্ণব কবিতা ছিল। চৈতন্যদেবের দিব্য প্রভাব বৈষ্ণব কবিদের সৃজন-প্রতিভাকে বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিল। শ্রীচৈতন্যদেবের জীবনলীলার মধ্যে বৈষ্ণব কবিরা কৃষ্ণলীলাকে প্রত্যক্ষ করেছেন। সেইজন্য রাধাকৃষ্ণ পদ রচনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদ রচনায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। ।

বাউলগান– বাউলগান, বাংলার লোক-সংস্কৃতির অন্যতম সম্পদ। বাউলরা বহু শতাব্দী ধরে শিষ্য পরম্পরায়, যে সাধন ভজন করে আসছেন তা অনেকটাই হিন্দু ধর্মশাস্ত্র বহির্ভৃত। বাউলের সাধনা মূলত মানবধর্মের সাধনা। যদিও ঈশ্বর প্রেমে তারা পাগল বাউলদের মধ্যে লালনফকিরের নাম উল্লেখযোগ্য। লালনের কবিত্ব, ভক্তি এবং
অসাম্প্রদায়িক মনোভাব বাউল সম্প্রদায়ের সংকীর্ণ সীমা ছাড়িয়ে শিক্ষিত সমাজে পরিচিতি লাভ করেছিল।

লোকসংগীত– লোকসংগীতগুলিতে প্রাত্যহিক জীবনের সংস্কৃতির পরিচয় সুন্দরভাবে বিন্যস্ত হয়েছে। মেছেনি, ভাদু, টুসু, ঝুমুর, গম্ভীরা, আলকাপ সমস্ত রকম লোকসংগীতে লোকসংস্কৃতির বিভিন্ন দিক উপস্থাপিত হয়েছে।

অঙ্কনকেন্দ্রিক– বিভিন্ন পূজা-পার্বন, অনুষ্ঠান উপলক্ষে আল্পনা দেওয়ালচিত্র, মাটিতে বিভিন্ন রকমের চক্রের অংকন, মাটির ঘট বা সরার উপর নানা ধরনের অঙ্কিত চিত্র, পটচিত্র, কাঁথা ও রুমালে অঙ্কিত বহু বিচিত্র নকশা, মন্দির মসজিদ গির্জার গায়ে নানান কারুকার্য থেকে লোকসংস্কৃতির একটা চেহারা চিনে নেওয়া যায়।

শূন্যস্থান পূর্ণ করো। (পালা গানের কথা পাঠের প্রশ্ন উত্তর)

________  কাহিনি নিয়ে অসমের সংস্কৃতিতেও গড়ে উঠেছিল এক সমৃদ্ধ _________ ।  সুকনান্নি অর্থাৎ __________  নারায়ণদেবেব _________ আখ্যান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল _____________  লোক-নাট্যের এক বিশেষ ধারা।

উত্তরঃ- মনসামঙ্গল  কাহিনি নিয়ে অসমের সংস্কৃতিতেও গড়ে উঠেছিল এক সমৃদ্ধ পরম্পরা ।  সুকনান্নি অর্থাৎ সুকবি বল্লভ   নারায়ণদেবেব পদ্মপুরাণ আখ্যান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল ওজাপালি  লোক-নাট্যের এক বিশেষ ধারা।

কোন উৎসব-অনুষ্ঠান কোথায় পালিত হয়, লেখো।

উৎসব-অনুষ্ঠান স্থান
ওজা-পালি অসম
মনসার ভাসান বঙ্গদেশ
চণ্ডীমঙ্গলের গীত বাংলায়
গম্ভীরা পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলায়

খ – ভাষা-অধ্যয়ন (ব্যবহারিক ব্যাকরণ)

(পালা গানের কথা পাঠের প্রশ্ন উত্তর)

পাঠ থেকে যুক্তবর্ণযুক্ত শব্দগুলো খুঁজে বের করে লেখো এবং সেগুলোকে ভেঙে দেখাও,  সেই যুক্তবর্ণগুলো দিয়ে দুটি করে শব্দ লেখো।

উদাহরণ –
মঙ্গল, অঙ্গ => ঙ্গ = ঙ + গ,  যেমন – বঙ্গ, ভঙ্গিমা।

উদাহরণের মতো শব্দ গঠন করো।

উদাহরণ – সহায় – সহায়ক 
সঞ্চালয় – সঞ্চালক৷
পরিবেশ – পরিবেশক।

এক কথায় প্রকাশ করো৷

যিনি গান করেন – গায়ক।
যিনি বাধ্যযন্ত্র বাজান – বাদক।
যিনি কৃষিকাজ করেন – কৃষক।
যিনি কোনো কিছুকে প্রকাশ করেন – প্রকাশক।

বাক্য রচনা করো।

পালা-গান – আমাদের গ্রামে পালা গান গাওয়া হয়।
ডালপালা – বৃক্ষটি প্রচুর ডালপালা বিস্তার করেছে৷
পালাবদল – প্রতি বছর ঋতুর পালা বদল ঘটে৷
গানের পদ – বৈষ্ণব পদকর্তারা বহু গানের পদ রচনা করেছেন।
পদগৌরব – ভারতবর্ষে বহু বিখ্যাত মানুষের পদগৌরব বর্তমান।
পদচিহ্ন – ভারতবর্ষে বহু মহাপুরুষের পদচিহ্ন রয়েছে৷
পদক্ষেপ – মহাপুরুষদের পদক্ষেপ অনুসরণ করা উচিত ৷

এসো জেনে নিই

মঙ্গলকাব্য, পুতুলনাচ

অসমের ভিন্ন ভিন্ন সমাজে প্রচলিত কয়েকটি লোক-সংস্কৃতির অনুষ্ঠান হল-



পাঠে তোমরা বিভিন্ন লোক-সংস্কৃতির সম্বন্ধে ধারণা লাভ করেছ। নিজ নিজ অঞ্চলে
তোমার দেখা বা শোনা যে কোনো একটি লোক-সংস্কৃতির অনুষ্ঠানের বিষয়ে
বর্ণনা করো।

(ক) মনসামঙ্গল
(খ) পুতুলনাচ
(গ) ওজা-পালি

উত্তরঃ- আমার দেখা একটি লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান হল পুতুলনাচ।

পুতুলনাচ – কোনো একটি কাহিনিকে পুতুলনাচের মাধ্যমে উপস্থাপিত করা হয়। সমস্ত উপস্থাপন নাটকীয় ভঙ্গিতে হয়। পুতুলনাচে অভিনয়ের জন্য সাধারণত হালকা সোলার পুতুল ব্যবহার কর হয়। কাহিনির বিভিন্ন চরিত্রের সাথে মিল রেখে অভিনেতা-অভিনেত্রী পূতুলগুলোকে সাজানো হয়। প্রত্যেকটি পূতুলের হাত, পা, মাথা, কোমর ইত্যাদি শরীরের বিভিন্ন অংশ কালো রঙের সুতো দিয়ে বাঁধা থাকে এবং একজন দক্ষ পরিচালক প্রয়োজন অনুসারে সুতো টেনে পুতুলগুলোকে পরিচালনা করে মঞ্চে অভিনয় করান।

একটি ছোটো মঞ্চে অভিনেতা-পুঁতুলগুলিকে নাচানো হয়। পর্দার আড়াল থেকে পরিচালক পুতুলগুলিকে নাচান এবং সূত্রধার পুতুলের মুখে সংলাপ আরোপ করেন। পুতুলনাচে মাঝে মাঝে হাস্যরসেরও সৃষ্টি করা হয়।

ঘ- প্রকল্প

মনসামঙ্গল ও চণ্ডীমঙ্গলের কয়েকজন কবির নাম সংগ্রহ করে লেখো৷
উত্তরঃ- মনসামঙ্গলের কয়েকজন কবির নাম – বিজয়গুপ্ত, নারায়ণদেব,  বিপ্রদাস।

চণ্ডীমঙ্গলের কয়েকজন কবির নাম – মাণিক দত্ত, মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, দ্বিজ মাধব।


পরবর্তী পাঠ- ১৪ বড়ো কে?

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn more
Ok, Go it!