সদৃশার্থক শব্দ | Bangla Grammar

ডেইলি বরাক
By -

সদৃশার্থক শব্দ : বাংলা ভাষায় এমন অনেক শব্দগুচ্ছ আছে, যাহার প্রায় সমার্থবাচক হইলেও ভিন্নার্থবোধক। কিন্তু জনপ্রিয় সাহিত্যিকেরাও অনেক সময় অত্যন্ত আলগাভাবে এই সব শব্দের ব্যবহার করিয়া থাকেন। এই জাতীয় কয়েকটি বহু প্রচলিত সদৃশার্থক শব্দগুচ্ছের উদাহরণ নিঙ্গে দেওয়া হইল।


১। অকস্মাৎ- অপ্রত্যাশিত বিপদ।

দৈবাৎ- নিয়তি – নির্ণয় দুর্ঘটনা।
সহসা- প্রাকৃতিক বিপদ- সম্পর্কিত।
হঠাৎ – অপ্রত্যাশিত- পূর্ব ঘটনা যেখানে লক্ষিত হয়।

২। অকাল- অপ্রসস্তকাল-অকালের আম; অবেলা-অতিশয় বেলা- অবেলায় স্নান; অসময়-বিপদের সময়- অসময়ের বন্ধু।

৩। অজ্ঞ- যে জানে না।
অশিক্ষিত- যে লেখা পড়া করে নাই।
অবোধ- বয়স কম, বুদ্ধিও অপক্ক।
নির্বোধ- বয়স বেশী, অথচ বুদ্ধিহীন ৷
মূর্খ – সাধারণত ‘বোকা’ অর্থে প্রযুক্ত।

৪। অহংকার – নিজের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জ্ঞান, অভিমান- প্রিয়জনের ত্রুটি হেতু ক্ষোভ; গর্ব-ধন, বিদ্যারূপের জন্য আত্মশ্লাঘা; দর্প – ধন ও বিদ্যার আতিশয্যের জন্য আত্মগৌরব প্রকাশ; দম্ভ- যে বিষয়ে যোগ্যতা নাই, সে বিষয়ে যোগ্যতা প্রকাশ।

৫। আগত – যে বা যাহা আসিয়াছে। আগামী- যে বা যাহারা আসে নাই, কিন্তু আসিবে।

৬। কুশল- গুরু ও লঘুজন, স্নেহ ও ভক্তিভাজন ব্যক্তিদের মঙ্গল আকাঙ্ক্ষা; কল্যাণ – কেবল মাত্র লঘুজন ও স্নেহভাজনের জন্য মঙ্গল আকাঙক্ষ; আশীর্বাদ- গুরুজনের দ্বারা শুভকামনাসূচক বচন।

৭। কুল- বহুত্ববাচক -ধেনুকুল, অলিকুল। গণ- বহুত্ববাচক- মনুষ্যগণ। নিচয়- প্রাণী এবং
অপ্রাণীবাচক বহুবচনে বোধক শব্দ- পুষ্পনিচয়, পগুনিচয়। বর্গ – প্রাণীবাচক বহুত্ববোধক শব্দ- নেতৃবর্গ, রাজন্যবর্গ। সভা- প্রাণীবাচক বহুত্ববাচক- পণ্ডিতসভা। মণ্ডলী – প্রাণীবাচক বহুবচনবোধক- কৃষকমণ্ডলী। গ্রাম, দাম, মণ্ডল, মালা, রাজি -অপ্রাণীবাচক বহুবচনবোধক শব্দ – ইন্দ্রিয়গ্রাম, বিদ্যুদ্দাম, মেঘমণ্ডল, মেঘমালা, পুষ্পরাজি।

৮। দল- একই আদর্শ সমধিতসম্প্রদায় – শ্রমিকদল; পাল- গৃহপালিত পশুর সমষ্টি – গোরুর পাল। সার্থ – বণিকদল- বণিকসার্থ, যুথ- পশুসমষ্টি – হস্তীযুথ।

৯। দর্শন- দেখা; সন্দর্শন- মহাপুরুষদের দেখা, পর্যবেক্ষণ- মনোযোগ দিয়া দেখা; পরিদর্শন – তন্ন তন্ন করিয়া দেখা।

সদৃশার্থক শব্দ

১০। বন্ধু – যাহার ত্যাগ সহ্য হয় না। সুহৃদ – যে সকল সময় একমত থাকিয়া প্রিয় বা মঙ্গল কাজ করে। সখা- প্রাণের তুল্য প্রিয়জন। মিত্র- যে একই প্রকার কাজ করে।

১১। ভ্রম – মনোযোগের অভাব হেতু ভুল। প্রমাদ – অজ্ঞতার জন্য ভুল। বিস্মরণ- স্মৃতিশক্তির অভাব হেতু ভুল।

১২। রীতি- পদ্ধতি, প্রথা। নীতি- ধর্মসংগত বা সমাজহিতকর বিধান।

১৩। শক্তি – কাজ করিবার ক্ষমতা; সামর্থ্য – শারীরিক বল। প্রতাপ- লোকবল ও অর্থবলজনিত শক্তি। ।

১৪। শ্রদ্ধা – অনাত্মীয় বড়দের প্রতি সন্মাননিষিক্ত; ভালবাসা- ভক্তি- আত্মীয় গুরুজনদের প্রতি হৃদয়ের সশ্রদ্ধ টান।

১৫। সহজ – অপরের উপর নির্ভর না করিয়া; অক্লেশে – শারীরিক কষ্টবোধ না করিয়া। অনায়াসে -বিনা চেষ্টায়।

১৬। অকাজ- অপ্রয়োজনীয় কাজ; কুকাজ- খারাপ কাজ।

১৭। আচার–চালচলন। যথা দেশাচার, লোকাচার, সদাচার, ব্যবহার- ব্যক্তি- বিশেষের চালচলন।

১৮। আধি- মনের রোগ; ব্যাধি-_দেহের পীড়া- ‘ব্যাধির চেয়ে আধি হল বড়’।

১৯। উপকরণ- যে সকল সমবায়ী কারণের জন্য কার্য সমাধা হয়- নৈবেদ্য পূজার উপকরণ।
উপাদান- যে সকল সমবায়ী কারণের গুণে দ্রব্য নির্মিত হয়। যথা- কাঠ চেয়ার নির্মাণের
উপাদান। |

২০। আদর- স্নেহের বাহ্য প্রকাশ। যথা- বেশী আদর দিয়ে ছেলে-মেয়েদের মাথা খাওয়া উচিত নয়; স্মেহ- ছোটদের প্রতি ভাল বাসা। যথা- সম্তান স্নেহে বিগলিত হওয়া উচিত নয়।

সমোচ্চারিত শব্দ 


#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn more
Ok, Go it!